আইভাস প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাণে বাঁচলেন হাওড়ার এক হৃদরোগী — সময়মতো হস্তক্ষেপে মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুর -এর চিকিৎসকদের অসাধারণ সাফল্য




ওয়েব ডেস্ক; ১০ জুন : সম্প্রতি মণিপাল হাসপাতাল,  তাদের মুকুন্দপুর শাখায় সফলভাবে বাঁচিয়ে তুলেছেন হাওড়ার এক ৫৬ বছর বয়সী ডায়াবেটিক ও হাইপারটেনসিভ পুরুষ রোগীকে, যিনি গুরুতর বুকে ব্যথা নিয়ে প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুর -এ রেফার করা হয়। রোগী ভর্তি হওয়ার পর, দ্রুত ইসিজি + ট্রপ টি টেস্ট করে জানা যায় তিনি একটি মারাত্মক হার্ট অ্যাটাক-এর শিকার হয়েছেন। রোগীর অবস্থা এবং ঝুঁকি বিবেচনা করে, ডঃ পরিজাত দেব চৌধুরী, কনসালট্যান্ট ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট, এবং তাঁর দল ট্রান্সরেডিয়াল অ্যাঞ্জিওগ্রাফি (একটি ব্যথাহীন, রক্তহীন স্ক্যানিং পদ্ধতি) এর সাহায্যে রোগীর হৃদপিণ্ডের বিস্তারিত চিত্র গ্রহণ করেন।

স্ক্যানের মাধ্যমে ধরা পড়ে হার্টের বাম মূল ধমনীতে একটি জটিল ব্লকেজ। এই অবস্থায়, দলটি আইভাস (ইন্ট্রাভাসকুলার আল্ট্রাসাউন্ড)-গাইডেড লেফট মেইন বিফারকেশন অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি পদ্ধতির সাহায্যে ধমনীতে কাটিং বেলুন ও ঔষধপ্রাপ্ত স্টেন্ট স্থাপন করে ব্লক দূর করেন। পদ্ধতির সময় রোগীর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল না থাকলেও, সফল চিকিৎসার পরে তিনি পরদিনই সুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।

ডঃ পরিজাত দেব চৌধুরী, কনসালট্যান্ট, ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি, মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুর - "এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, সময়মতো সঠিক চিকিৎসা এবং উন্নত প্রযুক্তি রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে। আইভাস (IVUS)প্রযুক্তির মাধ্যমে ধমনীর ভিতরের বাস্তব ছবি দেখে জটিল ব্লকেজ সফলভাবে সরানো সম্ভব হয়েছে। জেলার প্রান্তিক মানুষদের কাছে এই রকম উন্নত হার্ট কেয়ার পৌঁছে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।"

রোগীর বক্তব্য, "আমি প্রথমে বুঝতেই পারিনি যে বুকে ব্যথা এতটা মারাত্মক হতে পারে। সবকিছু এত দ্রুত ঘটল — ডাক্তাররা অবিলম্বে ব্যবস্থা নিলেন, আমাকে বোঝালেন ও সাহস জোগালেন। চিকিৎসার পুরো প্রক্রিয়াটাই প্রায় ব্যথাহীন ছিল। পরদিন থেকেই আমি অনেকটা ভালো অনুভব করি। এমন উন্নত হার্ট কেয়ার এত কাছাকাছি পাওয়া — এটা যেন আমার জীবনে নতুন সূচনা।"

কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া -এর একটি সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, দেশের দ্বিতীয় ও গ্রামীণ শহরগুলির ৪০% হৃদরোগী তীব্র জটিলতা দেখা দেওয়ার পরে তবেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার হন। এই পরিস্থিতিতে মণিপাল হাসপাতাল গোষ্ঠী -এর তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা তাদের আলাদা করে তোলে। হাসপাতালটিতে রয়েছে ৫০০+ ক্রিটিক্যাল কেয়ার বেড, ৭৫ জন বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্ট, ১৫ জন অভিজ্ঞ কার্ডিয়াক সার্জন, ও ৭টি অ্যাডভান্সড ক্যাথ ল্যাব। সেই সঙ্গে ২৪x৭ এমার্জেন্সি টিম ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ (নেফ্রোলজি, নিউরোলজি, এন্ডোক্রিনোলজি ইত্যাদি)-র উপস্থিতি নিশ্চিত করে যে কোনও জটিল পরিস্থিতিতে দেরি ছাড়াই জীবনদায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। প্রতি বছর এখানে ৩০,০০০-রও বেশি কার্ডিয়াক প্রোসিডিউর ও ৩,০০০+ হার্ট সার্জারি সম্পন্ন হয়।

Post a Comment

0 Comments