সানফিস্ট মম'স ম্যাজিক ' ভারতে দত্তক গ্রহণের' উদ্দেশ্য কে সমর্থন করে




ওয়েব ডেস্ক; ১৭ জুলাই : সানফিস্ট মম’স ম্যাজিক বহু মানুষের প্রিয়। এই ব্র্যান্ড বহু বছর ধরে শুধুমাত্র সুস্বাদু কুকিজ তৈরি করছে না, তারা মাতৃত্বের সারমর্মকেও উদযাপন করছে, তারা মায়েদের এই বলে সম্মান জানিয়ে আসছে যে, প্রত্যেক শিশুর জীবনে মায়েরাই হলেন “সবচেয়ে আন্তরিক সুপারপাওয়ার”। এই বিশ্বাসের প্রতি সৎ থেকে মম’স ম্যাজিক এ বছর একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ‘অ্যাডপশন ইন ইন্ডিয়া’ (ভারতে দত্তক) সংক্রান্ত ব্যাপারে সচেতনতা প্রসার করছে এবং বিষয়টিকে উত্সাহিত করছে। এই ব্র্যান্ড আগেও বেশ কিছু শক্তিশালী প্রচার অভিযান চালিয়েছে। যেমন, ‘নো মোর মিসড কল্স’, ‘হাগ হার মোর’, ও ‘উইল অব চেঞ্জ’। এবার তারা সন্তান দত্তক নেওয়া মায়েদের নিয়ে গড়ে ওঠা সামাজিক পক্ষপাতের বিরুদ্ধে নিজেদের সুদৃঢ় মত তুলে ধরার জন্য এগিয়ে এসেছে। তারা চায় এই মায়েরা যে সম্মান, সমান গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার যোগ্য তা যেন তাঁরা অবশ্যই লাভ করেন। সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ভারতে সন্তান দত্তক নেওয়ার বিষয়টিকে এখনও ভাল চোখে দেখা হয় না, একে ঘিরে এখনও মানসিক পক্ষপাত রয়েছে। বিশেষ করে সন্তান দত্তক নেওয়া মায়েদের সমান চোখে দেখার ক্ষেত্রে। অনেকেই এখনো মাতৃত্বকে জৈবিক বন্ধনের দৃষ্টিতে বিচার করেন । এ কথা তাঁরা মানতেই চান না যে, এমন অগণন শিশু ও নারী আছেন যাঁরা মায়ের নিঃশর্ত ভালবাসার উষ্ণতায় পরিপূর্ণ হওয়ার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই ব্র্যান্ডের দৃঢ় বিশ্বাস, জিনের সম্পর্ক যা-ই হোক না-কেন, প্রত্যেক শিশুরই মায়ের ভালবাসা পাওয়ার অধিকার আছে, আর সেই জন্যই ভ্রান্ত ধারণাকে ভাঙা জরুরি, সন্তান দত্তক সংক্রান্ত সঙ্কোচ কাটানো দরকার।       

এই বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য মম’স ম্যাজিক কলকাতায় একটি চিন্তা-উদ্রেক করার মতন প্যানেল ডিসকাশনের আয়োজন করল। যার বিষয়- ‘ভারতে সন্তান দত্তকের বিষয়টিকে স্বাভাবিক করে তোলা ও তাকে উত্সাহ দেওয়া’।   

প্যানেলে অংশগ্রহণ করেছিলেন গণ্যমান্য ব্যক্তি। যেমন, সৌমেতা মেধোরা, সেক্রেটারি ,দ্য ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর স্পন্সরশিপ অ্যান্ড অ্যাডপশন (ISSA),, অভিনেত্রী মন্দিরা বেদী; আইটিসি ফুডস-এর চিফ ডিজিটাল মার্কেটিং অফিসার শুভদীপ ব্যানার্জি; প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, আসন্ন চলচ্চিত্র ডিয়ার মা-এর পরিচালক; ও বহু প্রশংসিত অভিনেত্রী জয়া আহসান, তিনি উক্ত সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁদের কথোপকথন সবার মন ছুঁয়ে গেছে। তাঁরা যেসব বিষয়ে কথা বলেছেন, সেগুলি হল, প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ভেঙে দেওয়া, সবাইকে আপন করে নেওয়ার মনোভাব গড়ে তোলা, সন্তান দত্তক নেওয়ার বিষয়টিকে সহজ করে তোলার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ ও এনজিও-গুলির ভূমিকা। এ ছাড়াও তাঁরা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনের কথা ও অভিজ্ঞতাও ব্যক্ত করেছেন।   

এই আলোচনায় নিজের মনের গভীরের ব্যক্তিগত কথা ব্যক্ত করে প্রখ্যাত অভিনেত্রী মন্দিরা বেদী বলেন, "সন্তান দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত খুব সুন্দর হয়, যা মনে এক বদল নিয়ে আসে। পুরোপুরি ভালবাসার মধ্য দিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারার মা হিসাবে এমন সব প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে এবং সামাজিক পক্ষপাতের শিকার হতে হয়েছে, যা সন্তান দত্তক নেওয়া মায়েদের শুনতেই হয়। যেমন, আমি কি একটি সন্তানকে দত্তক নিয়ে তাকে নিজের সন্তানের মতন ভালবাসাতে পারব। মানুষ ভাবে যে সন্তান দত্তক নেওয়া যেন সর্বশেষ উপায়। কিন্তু ভালবাসার সঙ্গে তো কোনও শর্তাবলি থাকে না। তাই মম’স ম্যাজিক-এর মতন ব্র্যান্ড যা করছে তাকে আমি সত্যিই মূল্য দিই। তারা এই ধরনের কথোপকথনের জন্য পরিসর তৈরি করছে এবং সমাজকে তামাদি হয়ে যাওয়া ধ্যান-ধারণা ছেড়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে। যাতে প্রতিটি শিশুকেই মায়ের ভালবাসা দিয়ে বুকে জড়িয়ে নেওয়া যায়।" 

এই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল একটি দৃপ্ত ও মন ছুঁয়ে যাওয়া কবিতা, যার শিরোনাম ‘দিল সে মা’, এই কবিতায় খুব সুন্দর ভাবে মায়ের গভীর ভালবাসা, সুদৃঢ় মনোভাব ও নিষ্ঠা ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে সেই মায়েদের যাঁরা প্রায়ই পক্ষপাত ও সামাজিক ধ্যান-ধারণার শিকার হন। এই কবিতা খুব গভীর ভাবে মনে করিয়ে দেয় যে মাতৃত্বের ভিত হল ভালবাসা, জীব বিজ্ঞান নয়।  

এই অনুষ্ঠানে আইটিসি ফুডস ডিভিশনের চিফ ডিজিটাল মার্কেটিং অফিসার শুভদীপ ব্যানার্জি বলেন, "মম’স ম্যাজিক-এ আমরা সব সময় বিশ্বাস করি যে মায়ের ভালবাসার অসাধারণ শক্তিকে উদযাপন করা উচিত। ডিয়ার মা সিনেমার সঙ্গে অর্থপূর্ণ যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সন্তান দত্তক নেওয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে জরুরি কথাবার্তা শুরু করতে চাই এবং সেই সব মায়েদের পাশে দাঁড়াতে চাই যাঁরা একটি শিশুর জীবনে নিয়ে আসেন স্নেহের জাদুর স্পর্শ- তা সেই মূল্যবান সফর যেখান থেকেই শুরু হোক-না কেন। আমরা সবাই মিলে প্রত্যেক ধরনের মাতৃত্বকে গ্রহণ করার, সব ধরনের মাতৃত্বের সহমর্মী হওয়ার এবং সব ধরনের মাতৃত্বকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে সবাইকে অনুপ্রাণিত করতে পারব বলেই আমাদের আশা।”

Post a Comment

0 Comments