মণিপাল হসপিটালস কলকাতায় পালিত হল ইন্ডিয়ান অর্গান ডোনেশন ডে




ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা, ১৪ আগস্ট : প্রতি বছর ৩রা আগস্ট ভারতের প্রথম সফল মৃতদাতা হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের স্মরণে পালিত হয় ইন্ডিয়ান অর্গান ডোনেশন ডে। এ উপলক্ষে মণিপাল হসপিটাল, ইএম বাইপাস আয়োজন করল রোগী সচেতনতা কর্মসূচি, যেখানে অঙ্গদানের গুরুত্ব ও ট্রান্সপ্লান্টেশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন (প্রফ.) ডা. দিলীপ কুমার পাহাড়ি, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও প্রধান – নেফ্রোলজি, মণিপাল হসপিটাল, ইএম বাইপাস এবং (প্রফ.) ডা. অর্পিতা রায় চৌধুরী (লাহিড়ী), সিনিয়র কনসালট্যান্ট – নেফ্রোলজি ও ট্রান্সপ্লান্ট, প্রেসিডেন্ট – ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ অর্গান ট্রান্সপ্লান্টেশন (ISOT), মণিপাল হসপিটাল, মুখুন্দপুর। সঙ্গে ছিলেন মণিপাল হসপিটালস কলকাতার পাঁচটি ইউনিটের চিকিৎসকরা – ডা. রোহিত রুঙ্গটা, ডা. অভিষেক কুমার, ডা. উপল সেনগুপ্ত, ডা. অভিনন্দন ব্যানার্জি এবং ডা. স্মার্থ পুলাই। প্রায় ১০০ জন রোগী, পরিবারের সদস্য ও সাধারণ মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
২০২৫ সালের এপ্রিলে মণিপাল অর্গান শেয়ারিং অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট (MOST) পূর্ব ভারতের ‘ডিসিজড অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ডোনেশন’ অধ্যায়ের সূচনা করে। এর লক্ষ্য মৃতদাতা অঙ্গদানের প্রসার, পরিবারে আস্থা তৈরি, সচেতনতা বৃদ্ধি ও হাসপাতালগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো।
অনুষ্ঠানে ডায়ালাইসিসে থাকা রোগী ও তাঁদের পরিবারকে জানানো হয় কীভাবে অঙ্গ প্রতিস্থাপন, বিশেষ করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট, বহু মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারে 
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রফ. ডা. দিলীপ কুমার পাহাড়ি বলেন, “অঙ্গ প্রতিস্থাপন শুধুমাত্র একটি চিকিৎসা প্রক্রিয়া নয়, এটি জীবনের দান। ভারতে প্রতিবছর হাজার হাজার অঙ্গ বিকল রোগীকে বাঁচানো সম্ভব, যদি আরও বেশি মানুষ তাঁদের মৃত্যুর পর অঙ্গদান করতে এগিয়ে আসেন। এই ধরনের প্রচারের মাধ্যমে আমরা অঙ্গের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে যে বিশাল ফাঁক রয়েছে, তা পূরণ করার চেষ্টা করছি। প্রতিটি সম্ভাব্য অঙ্গদান কারও জীবনে নতুন আলো আনতে পারে এবং একটি পরিবারকে নতুন আশা দিতে পারে।”
অঙ্গ বিকলের কারণ নিয়ে সতর্ক করে ডা. অর্পিতা রায় চৌধুরী (লাহিড়ী) বলেন, “ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও স্থূলতা—এই তিনটি জীবনযাত্রাজনিত অসুখ ধীরে ধীরে কিন্তু নীরবে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে নষ্ট করে দেয়। অনেক রোগী তাঁদের জীবনের শেষ সময়টা ডায়ালাইসিস মেশিনে বা ভেন্টিলেটর সাপোর্টে কাটান, যা অত্যন্ত কষ্টকর। কিন্তু অঙ্গদান তাঁদের জীবনে দ্বিতীয় সুযোগ দিতে পারে, তাঁদের শেষ সময়ে মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে পারে এবং পরিবারের কাছে অমূল্য স্বস্তি আনতে পারে।”
মণিপাল হসপিটালস কলকাতা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক দলের মাধ্যমে অঙ্গ প্রতিস্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অনুষ্ঠানে NOTTO–ROTTO–SOTTO কাঠামো সম্পর্কেও আলোচনা হয়, যা ভারতে অঙ্গদান, প্রতিস্থাপন, রেজিস্ট্রি ও বরাদ্দের নৈতিক এবং প্রয়োজনভিত্তিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ান অর্গান ডোনেশন ডে ৩রা আগস্ট পালন করা হলেও বিশ্ব অঙ্গদান দিবস পালিত হয় ১৩ই আগস্ট—যা সারা বিশ্বে অঙ্গদানের জীবনরক্ষাকারী শক্তি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে পালন করা হয়।

Post a Comment

0 Comments